Add For Sale 50% off

beakingnews

পোশাক, ওষুধ ও কৃষিপণ্য খাত আলাদা জমি পাবে

চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনটি খাতের জন্য আলাদা আলাদা জমি চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এর মধ্যে বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য প্রায় দেড় হাজার একর, ওষুধশিল্পের জন্য ৩২৮ একর এবং কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানার জন্য প্রায় ৩০০ একর জমি থাকবে। এতে কেবল ওই সব খাতের বিনিয়োগকারীরা জমি বরাদ্দ পাবেন।
ইতিমধ্যে এসব খাতের বেশ কিছু দেশি-বিদেশি কোম্পানি বেজার কাছে জমি বরাদ্দের আবেদন করেছে। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খাতভিত্তিক কারখানাগুলোকে এক জায়গায় রাখতে চাই। এ জন্যই জমি চিহ্নিত করে রাখা। তবে চাহিদা বেশি থাকায় পোশাক ও বস্ত্র খাতকে একাধিক জায়গায় জমি দিতে হতে পারে।’
http://www.businessbarta24.com

এদিকে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভূমি উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলছে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর আকার হবে প্রায় ৩০ হাজার একর। এর মধ্যে ১৬ হাজার একর জমি বেজার হাতে এসেছে। সেখানে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) প্রায় ১ হাজার ১৫০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাওয়ার প্যাক-ইস্টওয়েস্ট-গ্যাসমিন কনসোর্টিয়াম পেয়েছে ৫৫০ একর জমি। এ ছাড়া মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১ হাজার ৫৫ একর জমি চেয়েছে ভারত।
২০১৯ সালের শেষ নাগাদ বেজা ৭ হাজার ৮০০ একর জমি কারখানা করার জন্য প্রস্তুত করতে চায়, যা হবে সাভারে প্রতিষ্ঠিত চামড়া শিল্পনগরের ৩৯টির সমান আকারের। চামড়া শিল্পনগরে ১৫৪টি ট্যানারি জমি পেয়েছে।

সম্প্রতি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বেজার চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মিরসরাইয়ে ৫০০ একর জমি চান। এর বাইরে সেখানে পোশাক খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ডিবিএল গ্রুপ ৮০০ একর ও অনন্ত গ্রুপ ২৮০ একর জমি চেয়েছে। পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মিরসরাইয়ে ইতিমধ্যে পোশাক ও বস্ত্র খাতের ১ হাজার একরের বেশি জমির চাহিদা তৈরি হয়েছে। এটা দেড় হাজার একরেও উন্নীত হতে পারে। বিজিএমইএর চাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারা প্রস্তুত থাকলে আমরা ৫০০ একর জমি দিতে পারব। এটা পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ বিকাশের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেবে।’
বিজিএমইএ জমি নিয়ে আগ্রহী পোশাকশিল্প মালিকদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি দিয়েছে, যাতে সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা জানাতে বলা হয়েছে। ওই চিঠিতে প্রতি একর জমির ৫০ বছরের ইজারা মূল্য ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। প্লট বুকিং দিতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হবে, যা অফেরতযোগ্য।

এদিকে মুন্সিগঞ্জের বাউশিয়ায় ৫৩০ একর জমিতে যে পোশাকপল্লি হওয়ার কথা, তা মূলত ভেস্তে গেছে। এটি নিয়ে বেজা কোনো কাজ করছে না। বিজিএমইএর তরফেও কোনো কার্যক্রম নেই। বাউশিয়ায় পোশাকপল্লি নিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে বেজার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার মনে হয় না।’
মিরসরাইয়ে জমি বরাদ্দের জন্য গত রোববার পর্যন্ত বিভিন্ন খাতের মোট ১৩৩টি কোম্পানি আবেদনপত্র সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ইজারামূল্যের একটি অংশসহ আবেদনপত্র জমা দিয়েছে ৩৬টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে দেশি-বিদেশি কয়েকটি ওষুধ ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি রয়েছে। ওষুধ কোম্পানির জন্য ৩২৮ একর জমি রাখা হয়েছে, সেখানে একটি ‘ফার্মা ভিলেজ’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় বেজা। এর পাশেই প্রায় একই আকারের একটি ‘ফুড প্রসেসিং জোন’ তৈরি করবে বেজা।
ফার্মা ভিলেজের বিষয়ে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা শুনেছি সেখানে জমির জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। তবে সমিতির সঙ্গে বেজার কোনো আনুষ্ঠানিক আলাপ হয়নি।’
মিরসরাইয়ে জমি উন্নয়নের পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে গ্যাস সরবরাহের জন্য ২৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইপলাইন বসাচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। মিরসরাইয়ে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে আরপিসিএল (রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড)। আরও ৪০০ মেগাওয়াটের জন্য জমি চেয়েছে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কারখানায় পানি সরবরাহের জন্য মিরসরাইয়ে দুই একরের জলাধার তৈরি করা হবে। পাশাপাশি ফেনী নদীর পানি ব্যবহার করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংকে (আইডব্লিউএম) নিয়োগ করার প্রক্রিয়া চলছে।
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য আলাদা একটি বন্দর থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরণি নামে চার লেনের একটি সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে। এ সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
বেজার চেয়ারম্যান বলেন, মিরসরাইয়ে কারখানা করার ক্ষেত্রে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি বা অন্যান্য অবকাঠামোর কোনো সংকট হবে না।
//Breaking news js code here start //Breaking news js code here end